জলবায়ু বাস্তুচ্যুতদের জাতীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সুরক্ষা দিতে হবে : জলবায়ু বাস্তুচ্যুতি বিষয়ক আন্তরাষ্ট্রীয় সম্মেলন উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলনে নাগরিক সমাজের নেতৃবৃন্দ

Daily Patradoot
April 3, 2015
------------------
বৃহস্পতিবার নাগরিক সমাজের ১৪টি সংগঠন ও নেটওয়ার্কের উদ্যোগে খুলনায় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ‘জলবায়ু উদ্বাস্তুদের অধিকার রক্ষায় জাতীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক নীতিমালা প্রণয়ন’-এর দাবি জানানো হয়। ন্যানসেন ইনিশিয়েটিভের সহযোগিতায় বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে আগামী ৩-৫ এপ্রিল ২০১৫ অনুষ্ঠিতব্য জলবায়ু ও দুর্যোগতাড়িত বাস্তুচ্যুতি বিষয়ক আন্তরাষ্ট্রীয় সম্মেলন উপলক্ষ্যে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সার্ক ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ১৪টি দেশের সরকারি প্রতিনিধি ছাড়াও জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সংগঠনের শতাধিক প্রতিনিধি এ সম্মেলনে অংশ নিচ্ছেন। উল্লেখ্য, নরওয়ে ও সুইজারল্যান্ডের উদ্যোগে ন্যানসেন ইনিশিয়েটিভ নামক আন্তর্জাতিক এ সংগঠনটি পরিচালিত হয়।

অক্সফ্যাম-এর সহযোগিতায় অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলন আয়োজনকারী ১৪টি সংগঠন হলো বাপা (বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন), বিপনেট-সিসিবিডি (বাংলাদেশ ইন্ডিজেনাস পিপলস্ নেটওয়ার্ক ফর ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড বায়োডাইভার্সিটি, (বিসিজেএফ) বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেঞ্জ জার্নালিস্ট ফোরাম), সিসিডিএফ (ক্লাইমেট চেঞ্জ ডেভেলপমেন্ট ফোরাম), সিএসআরএল (গ্রামীণ জীবনযাত্রর স্থায়িত্বশীল উন্নয়নের জন্য প্রচারাভিযান), ক্লিন (উপকূলীয় জীবনযাত্রা ও পরিবেশ কর্মজোট), সিডিপি (কোস্টাল ডেভেলপমেন্ট পার্টনারশীপ), কাউন্টার ফটো, ইক্যুইটিবিডি (ইক্যুইটি অ্যান্ড জাস্টিস ওয়ার্কিং গ্র“প- বাংলাদেশ), এফইজেবি (ফোরাম ফর এনভায়রনমেন্টাল জার্নালিস্ট ইন বাংলাদেশ), লিডার্স, পিআরডিআই (পার্টিসিপেটরি রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ইনিশিয়েটিভ), রূপান্তর ও উদয়ন-বাংলাদেশ।

সংবাদ সম্মেলন পরিচালনা ও লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ক্লিন-এর প্রধান নির্বাহী হাসান মেহেদী, স্বাগত বক্তব্য রাখেন রূপান্তরের নির্বাহী পরিচালক রফিকুল ইসলাম খোকন। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সিএসআরএল-এর সাধারণ সম্পাদক শরমিন্দ নিলোর্মী, সিজিসি’র ড. আহসান উদ্দীন আহমেদ, ইক্যুইটিবিডি’র প্রধান সঞ্চালক রেজাউল করিম চৌধুরী ও অক্সফ্যাম-এর অ্যাডভোকেসি কোঅর্ডিনেটর তানভীর মাহমুদ। সংবাদ সম্মেলন শেষে কাউন্টার ফটো’র দীন মোহাম্মদ শিবলীর জলবায়ু বাস্তুচ্যুতি বিষয়ক আলোকচিত্র প্রদর্শনী ও ক্যাম্পেইন পোস্টকার্ড উম্মোচন করেন খুলনা নাগরিক ফোরামের চেয়ারপারসন শেখ আব্দুল কাইয়ুম।

বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান জলবায়ু বাস্তুচ্যুতির উপর আলোকপাত করে শরমিন্দ নিলোর্মী বলেন, আগামী ২০৫০ সাল নাগাদ অগত্যা বাস্তুচ্যুত জনগোষ্ঠীর সংখ্যা ৩ কোটি ছাড়িয়ে যেতে পারে। তিনি ২০০৭ সাল থেকে বাংলাদেশের নাগরিক সমাজের অব্যাহত দাবির কথা তুলে ধরে বলেন, এ বাস্তুচ্যুতি ব্যবস্থাপনার জন্য জাতীয় ও আন্তর্জাতিক একান্ত জরুরি। জলবায়ু বিশেষজ্ঞ ড. আহসান উদ্দীন আহমেদ বলেন, জলবায়ু দুর্যোগের জন্য দায়ী উন্নত দেশগুলোকেই জলবায়ুতাড়িত বাস্তুচ্যুতদের পুনর্বাসনে দায়িত্ব নিতে হবে। তিনি জরুরি ভিত্তিতে বাংলাদেশের আভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যুতি ব্যবস্থাপনা নীতিমালা তৈরির উপর গুরুত্বারোপ করেন।

আন্তরাষ্ট্রীয় সম্মেলনটি খুলনায় আয়োজন করায় সরকারকে ধন্যবাদ দিয়ে রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, এ অঞ্চল সফরের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক প্রতিনিধিরা দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে জলবায়ু বাস্তুচ্যুতি সম্পর্কে জানতে পারবেন। তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে, বিশেষ করে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে স্পষ্ট করেই বলেছেন, ক্রমবর্ধমান বাস্তুচ্যুতি ব্যবস্থাপনা করা বাংলাদেশের জন্য প্রায় অসম্ভব। কিন্তু সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় এখনও জাতিসংঘে কোনো আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব পেশ করে নি। অক্সফ্যামের অ্যাডভোকেসি কোঅর্ডিনেটর তানভীর মাহমুদ বলেন, জলবায়ু বাস্তুচ্যুতি বিষয়ে বাংলাদেশের দাবি তুলে ধরার জন্য খুলনায় অনুষ্ঠিতব্য ন্যানসেন সম্মেলন একটি সুযোগ হিসেবে গ্রহণ করা উচিৎ। লিখিত বক্তব্যে নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে দাবিসমূহ তুলে ধরেন ক্লিন-এর হাসান মেহেদী।

Popular Articles

নির্বাচনী ইশতেহারে দক্ষিণাঞ্চলের কৃষি রক্ষার বিষয়টি অন্তর্ভূক্ত করতে হবে

Video Message from Bangladesh to COP-22

Housing for Cyclone Aila affected Forest Peoples of Dacope and Koyra Upazila under Khulna Districts