প্রাণবৈচিত্র্য রক্ষা ছাড়া টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয়

Bahumatrik.com
২৬ মে ২০১৬ বৃহস্পতিবার, ১১:০১  পিএম
---------------------------------------
বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের প্রাণবৈচিত্র্যের বিষয়টি বরাবরই উপেক্ষা করা হয়েছে। তাই এ অঞ্চলের উন্নয়ন প্রকল্পগুলো কয়েক দশক পর অভিশাপ হয়ে দেখা দিয়েছে। প্রাণবৈচিত্র্য রক্ষা করার ছাড়া কোনো অঞ্চলেই টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয়। বিষয়টি খণ্ডিতভাবে ভাবার কোনো সুযোগ নেই। কেননা এ অঞ্চলের মাটি, পানি, বায়ুপ্রবাহ, লবণাক্ততা সবকিছুই প্রাণবৈচিত্র্যের সঙ্গে সম্পর্কিত। বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক প্রাণবৈচিত্র্য দিবস উপলক্ষ্যে স্থানীয় একটি হোটেলে আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তারা এ কথা বলেন।

এ্যাওসেড, বাংলাদেশ নাগরিক অধিকার আন্দোলন, উপকূলীয় জীবনযাত্রা ও পরিবেশ কর্মজোট (ক্লিন), পরিবর্তন-খুলনা ও টিম থিয়েটারের যৌথ উদ্যোগে আলোচনা সভাটি অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভায় ধারণাপত্র উপস্থাপন করেন ক্লিন-এর প্রধান নির্বাহী হাসান মেহেদী।

বাংলাদেশ নাগরিক অধিকার আন্দোলনের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট কুদরত-ই-খুদা’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক ড. মল্লিক আনোয়ার হোসেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন সুন্দরবন একাডেমির নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক আনোয়ারুল কাদির, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান ডিসিপ্লিনের অধ্যাপক ড. দিলীপ কুমার দত্ত এবং তথ্য অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ম. জাভেদ ইকবাল। আলোচনা সভা শেষে বাংলাদেশের সুন্দরবন ও দক্ষিণাঞ্চলের পরিবেশবৈচিত্র্য বিষয়ক মনোজ্ঞ নাটক উপস্থাপন করে টীম থিয়েটার-এর নাট্যদল।

দক্ষিণাঞ্চলের সাম্প্রতিক উন্নয়নের জন্য বর্তমান সরকারকে ধন্যবাদ দিয়ে বক্তারা বলেন, মহাসড়ক ও বিদ্যুত সরবরাহে উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে বিপুল পরিমাণ অপরিকল্পিত বেসরকারি বিনিয়োগ হচ্ছে যা ভবিষ্যতে আবারও অভিশাপ হয়ে দেখা দিতে পারে। কোন ধরনের শিল্প-কারখানা বা অবকাঠামো কী ক্ষতি করবে সে সম্পর্কে গবেষণা ও পরিকল্পনা না করে বিনিয়োগ করলে তা লাভের চেয়ে ক্ষতির মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে।

সভায় বক্তারা বলেন, প্রাণবৈচিত্র্য রক্ষা করে পরিবেশবান্ধব উন্নয়ন সম্ভব হলেও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে উন্নয়ন ও পরিবেশকে মুখোমুখি করা হয়েছে। ফলে ষাটের দশকের কাক্সিক্ষতি বেড়িবাঁধ আশির দশকে অভিশাপ হয়ে দেখা দেয়। উপকূলীয় অঞ্চলের মাটিতে একই সঙ্গে ধান ও মাছ চাষ সম্ভব হলেও, ব্যাপকভাবে বিষের ব্যবহারের ফলে উপকূলীয় মৎস্য-সম্পদ পুরোপুরি শেষ হয়ে গেছে। বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গঠন করার চেয়ে উপকূলীয় অঞ্চলে শস্য সংরক্ষণাগার গড়ে তোলা দরকার। বক্তারা দ্রুততর সময়ে খুলনায় কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করার দাবি জানান।

এ্যাওসেড-এর নির্বাহী পরিচালক শামীম আরফিন-এর সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন নাজমুল আযম ডেভিড। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ক্লিন-এর চেয়ারপারসন সাজ্জাদুর রহিম পান্থ, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির জেলা সংগঠক মনিরুল হক বাচ্চু, জিল্লুর রহমান, আইআরভি’র খালিদ পাশা জয়, সুশীলন-এর রবিউল ইসলাম, অ্যাডোর-এর বিপ্লব ভট্টাচার্য্য, বেডস্-এর ফেরদৌসী শারমিন, নবলোক-এর রিয়াদুল করিম, জনউদ্যোগ’র মহেন্দ্রনাথ সেন, সিডিপি’র ইকবাল হোসেন বিপ্লব, পরিবর্তন-খুলনা’র মোস্তাহিদুর রহমান বাবু, মাফরুদা খাতুন, ইমরান হোসেন ইমন, নিজেরা করি’র পবিত্র সরকার, মিজানুর রহমান, মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থা’র অ্যাডভোকেট মোমিনুল ইসলাম, জিওন হেলথ্ ফাউন্ডেশনের সাইফুল ইসলাম মোহন, পরিবেশকর্মী জামিল আহমেদ, এ্যাওসেড-এর আব্দুর রহিম, সুমন বিশ্বাস, ক্লিন-এর রেজাউল করিম জিতু, সুবর্ণা ইসলাম দিশা, নাসিম রহমান কিরন প্রমূখ।

Popular Articles

নির্বাচনী ইশতেহারে দক্ষিণাঞ্চলের কৃষি রক্ষার বিষয়টি অন্তর্ভূক্ত করতে হবে

Video Message from Bangladesh to COP-22

Housing for Cyclone Aila affected Forest Peoples of Dacope and Koyra Upazila under Khulna Districts